অপরাহ্নের গল্প
হুমায়ূন আহমেদ
লেখক-পরিচিতি
বাংলাদেশের সমসাময়িক সাহিত্যজগতে হুমায়ুন আহমেদ যাদুকরী নাম। মূলত ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ-এর প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে' প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে। এই অর্থে তাঁকে সমকালীন আখ্যানকার বলা যায়। তাঁর আর একটি অপূর্ব সাহিত্যকর্ম হল ‘শঙ্খনীল কারাগার'।
হুমায়ূন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জেলার কুতুবপুর গ্রামে। রসায়নের মেধাবী ছাত্র ড. হুমায়ুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্নাস ও মাস্টার্স উভয় পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পলিমার কেমিস্ট্রিতে গবেষণার জন্য পি.এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের এ অধ্যাপক ১৯৮১ সালে তার সাহিত্যেকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার' লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি পান সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান - একুশে পদক। এছাড়াও পেয়েছেন শিশু একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, শিল্পাচার্য ‘জয়নুল আবেদিন স্বর্ণপদক সহ আরো অনেক পুরস্কার। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে তাঁর উপন্যাস সমগ্র'র দশম খন্ডই শুধু প্রকাশিত হয়নি সেই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স ফিকশন সমগ্র' এবং এক আশ্চর্য চরিত্র মিসির আলীর আখ্যান নিয়ে ‘মিসির আলী অমনিবাস'। তাঁর রচিত একাধিক জনপ্রিয় কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে টেলিভিশন নাটক। অসংখ্য নাটক ও উপন্যাস রচয়িতা হুমায়ূন আহমেদ চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও সমান দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছায়াছবি ‘আগুনের পরশমনি' শ্রেষ্ঠ ছবিসহ ৮টি শাখায় পেয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
প্রায় এক যুগ আগের কথা (১৯৯৪), আমেরিকার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মানুষের জন্যে একটা ডকুমেন্টারি তৈরি করবে। বিষয় এইডস। জনসচেতনমূলক ছবি। ডকুমেন্টারি তৈরির দায়িত্ব পড়ল আমার ওপর। আমি গভীর জলে পড়লাম। এইডস বিষয়ে আমার জ্ঞান শূন্যের কাছাকাছি। শুধু জানি এটি একটি ভাইরাসঘটিত ব্যাধি। যে ভাইরাস থেকে রোগটা হয় তার নাম Human Immune Deficiency Virus। সংক্ষেপে HIV ঘাতক ব্যাধি। ঔষুধ আবিষ্কার হয় নি। এইডস হওয়া মানেই মৃত্যু।
শূন্যজ্ঞান নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরিতে হাত দেওয়া যায় না। বিষয়টি ভালোমতো জানা দরকার। একজন এইডস-এর রোগীকে খুব কাছ থেকে দেখা দরকার। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সিলেটের এক গ্রামে একজন এইডস রোগীর সন্ধান পাওয়া গেল। তার নাম আব্দুল মজিদ। সে কাজ করত ইন্দোনেশিয়ায়। ঘাতক ব্যাধি সে বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছে। তার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। রোগীর আত্মীয়স্বজনরা বিরাট হৈ চৈ শুরু করল, আব্দুল মজিদের এইডস হয় নি। সবই দুষ্টু লোকের রটনা। আব্দুল মজিদ নেক ব্যক্তি; আদর্শ জীবন যাপন করেন- ইত্যাদি।
আমার লেখক পরিচিতির কারণেই হয়তোবা রোগীর দেখা পাওয়া গেল। ছোট্ট একটা ঘরে কঙ্কালসার একজন মানুষ শীতলপাটিতে শুয়ে আছে। একটু পর পর সে হা করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ঠোঁটের কাছে কয়েকটা মাছি বসে আছে। হাত দিয়ে মাছি তাড়াবার ক্ষমতাও মানুষটির নেই। তার চোখ যক্ষমারোগীর চোখের মতো জ্বলজ্বল করছে। সে প্রতীক্ষা করছে মৃত্যুর। বেচারাকে দেখে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। নিজের অজান্তেই তার কপালে হাত রাখলাম। সে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। কাঁদতে কাঁদতেই বলল, তার এইডস হয়েছে এটা সত্যি। সে কিছুদিনের মধ্যে মারা যাবে এটাও সত্যি। তার একমাত্র দুঃখ কেউ তার কাছে আসে না। তার স্ত্রী দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছে। কেউ তার ঘরে পর্যন্ত ঢোকে না। তাকে খাবার দেওয়া হয় জানালা দিয়ে। তার ঘরের একটা মাত্র জানালা, সেটাও থাকে বন্ধ। অথচ সে পরিবারের জন্য কত কিছুই না করেছে।
আমি তাকে বললাম, ‘ভাই, রোগটা বাঁধালেন কীভাবে?
সে মাথা নিচু করে বলল, বিদেশ থেকে নিয়ে আসছি। খারাপ মেয়ে মানুষের সাথে যোগাযোগ ছিল। আমার পাপের শাস্তি।'
পৃথিবীতে অনেক ব্যাধিকেই পাপের শাস্তি কিংবা ঈশ্বরের অভিশাপ হিসেবে দেখা হয়েছে। যেমন - কুষ্ঠ রোগ এইডস রোগ-এর কপালে পাপের শাস্তির সিল ভালোমতো পড়েছে, কারণ সম্ভবত এ রোগের সঙ্গে অসংযত যৌনতার সরাসরি সম্পৃক্ততা।
এ রোগ প্রথম ধরা পড়ে সমকামীদের মধ্যে (১৯৮১ সান, নিউইয়র্ক এবং ক্যালফোর্নিয়া)। শুরুতে গবেষকরা ধারণা করেছিলেন, এ রোগের প্রধঅন কারণ সমকামিতা। এ ধারণা এখন আর নেই। ১৯৮৩ সনে ফরাসি গবেষক লুক মনটরগনিয়ার এবং ১৯৮৭ সনে আমেরিকার রবার্ট গ্যালো আবিষ্কার করেন ভাইরাসঘটিত এজেন্ট HIV টাইপ ওয়ান থেকে এইডস ব্যাধির সৃষ্টি। পশ্চিম আফ্রিকার এইডস রোগীদের পরীক্ষা করে HIV টাইপ টু বের করা হয়। এইচআইভি'র প্রধান কাজ, মানুষের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া। টাইপ ওয়ান এ কাজটি করে দ্রুত, টাইপটু ভাইরাস কাজ করে ধীরে। রোগের লক্ষণ জটিল কিছু না - দুর্বলতা, জ্বর, ডায়রিয়া, লসিকা গ্রন্থির ফুলে যাওয়া। এই অতি সাধারণ লক্ষণের অসুখ এক সময় সংহারকমূর্তি ধারণ করে।
এই কালান্তক ব্যাধির ভয়াবহতার কারণেই জাতিসংঘে গঠিত হয়েছে এইডস বিষয়ক সংস্থা (UNAIDS)। ১লা ডিসেম্বরকে বিশ্ব এইডস দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন সারা বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে দিবসটি পালন করা হয় নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে। উদ্দেশ্য একটি - মানুষকে যত পারা যায় সচেতন করে তোলা জাতিসংঘের এইডস সংস্থার পরিসংখ্যার দেখলে অাঁতকে উঠতে হয়। ২০০৫ সনের হিসেবে এইচআইভি সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ছিল চার কোটির বেশি। বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিদিন ১৪ হাজার মানুষ এইআইভি'তে আক্রান্ত হচ্ছে। অসচেতনতার কারণে প্রতিদিন ৮২০০ মানুষ এইডস আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। সাহারা মরুভূমির চারপাশের আটচল্লিশটি দেশে এখন মৃত্যুর প্রধান কারণ এইডস। অনেক দেশেই এই মরণব্যাধি মানুষের গড় আয়ু দশ বছর কমিয়ে দিয়েছে। ভারত, নেপাল, বার্মা, চীন, ভিয়েতনাম ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডে এইডস দ্রুত ছড়াচ্ছে।
সেই তুলনায় আমরা এখনো ভালো আছি। ঘোড়া এখনো লাগামছাড়া হয়নি। UNAIDS এর এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা ১৩৪, এইডস থেকে মৃত্যুর সংখ্যা ৭৪, এইচআইভি পজেটিভ মানুষের সংখ্যা ৬৫৮। এই পরিসংখ্যানে আনন্দে উল্লোসিত হবার কিছু নেই। কারণ এরই মধ্যে বাংলাদেশে এইচআইভি এইডস আক্রান্তের সংখ্যা এক বছরে ৬৫৮ থেকে বেড়ে ৮৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে এইডস আক্রান্ত হয়েছে ২৪০ জন এবং মারা গেছে ১০৯ জন। সুতরাং পাগলা ঘোড়া যে কোনো সময় লাগামছাড়া হতে পারে। কীভাবে পারে, তা ব্যাখ্যা করার আগে এইডস কীভাবে ছড়ায় সে সম্পর্ক একটু বলে নিই।
মানুষের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস কোথায় থাকে? তার অবস্থান তিন জাতীয় তরল পদার্থে বীর্যে, রক্তে এবং মায়ের দুধে। কাজেই রোগ ছড়াবে তিন জাতীয় তরলের আদান-প্রদানে।
ক. এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে অনিরাপদ যৌন মিলনে। অনিরাপদ যৌন মিলনের অর্থ কনডমবিহীন যৌন মিলনে। লিখতে অস্বস্তি লাগছে, কিন্তু অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে স্পেডকে স্পেড বলাই বাঞ্জনীয়।
খ. রক্ত আদান-প্রদান। এইআইভি আক্রান্ত রোগীরে রক্ত শরীরের নেওয়া।
গ. শিশুরা এইচআইভি-তে আক্রান্ত হয় মায়ের দুধ পানে।
বাংলাদেশ শিক্ষায় অনগ্রসর হতদরিদ্র একটি দেশ। পতিতাবৃত্তি দরিদ্র দেশের অনেক অভিশাপের একটি। যৌনকর্মীরা (নারী এবং পুরুষ) নগরে-গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। শিক্ষিত আধুনিক তরুণ-তরুনীদের মধ্যে নৈতিকতা অনুশাসন তেমনভাবে কাজ করছে না। অবাধ মেলামেশাকে এখন অনেকেই আধুনিকতার অংশ মনে করেছে। তথাকথিত এই আধুনিকতার কারণে তারা যে বড় ঝুঁকির মধ্যে আছে তা তারা বুঝতে পারছে না।
বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে আছে এ দেশের মেয়েরা। তাদের যৌনশিক্ষা নেই বললেই হয়। মূল কারণ যৌনতা-বিষয়ক সমস্ত ব্যাপারটাই এ দেশে ট্যাবু। সমাজে মেয়েদের অবস্থান দুর্বল। অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক বাধা দেবার ক্ষমতাও এদের নেই।
আমাদের পাশের দেশগুলির এইডস রোগ বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এসব দেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আনন্দ-পিপাসুরা সেসব দেশে যাচ্ছেন। ভিনদেশের যৌনকর্মীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তারা দেশে ফিরছেন এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে। নিজেরা কিন্তু চট করে সেটা বুঝতে পারছেন না। কারণ এইচআইভি মানুষের শরীরে দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দশ বছর এইচআইভি থাকবে ঘুমন্ত। এইচআইভি ঘুমন্ত থাকলেও এইচআইভি বহন করা মানুষরা তো ঘুমন্ত না। তারা মহানন্দে তাদের শরীরে এইচআইভি ছড়িয়ে বেড়াবেন। জাতি অগ্রসর হবে ভবিষ্যৎহীন অন্ধকারের দিকে।
বাংলাদেশে মাদক গ্রহণের সংখ্যাও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। হিরোইন আসক্তরা সুচ দিয়ে শরীরে বিষ ঢোকাচ্ছে। একই সুচ অন্যরাও ব্যবহার করছে। এইচআইভি ভাইরাস ছড়ানোর কী সুন্দর সুযোগ।
এ দেশের কিছু অসহায় মানুষ বেঁচে থাকেন শরীরের রক্ত বিক্রি করে। তাদেরই কারো এইচআইভি পজিটিভ রক্ত যখন অন্য কাউকে দেওয়া হবে তখন অবস্থাটা কী হতে পারে? অনেক উন্নত দেশেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। দূষিত রক্ত মিশে গেছে ব্লাড ব্যাংকের রক্তে।
সিলেটের এইডস রোগীর কাছে ফিরে যাই। আমি রোগীর আত্মীয়স্বজনকে ডেকে বোঝালাম যে এ রোগ অন্যান্য ছোঁয়াচে রোগের মত না। স্বাভাবিক মেলামেশায় এ রোগ ছড়াবে না। এইডস রোগী যে গ্লাসে পানি খাচ্ছে সেই গ্লাসে অন্য কেউ যদি পানি খায় তাতেও তার রোগ হবে না। আমার কথায় তেমন কাজ হল বলে মনে হল না। তারা রোগীর দিকে ঘৃণা এবং ভয় নিয়ে তাকিয়ে রইল।
পশু-পাখিদের মধ্যে কেউ যদি রোগগ্রস্ত হয় তখন অন্যরা তাদের ত্যাগ করে। রোগীকে মরতে হয় সঙ্গীবিহীন অবস্থায় একা একা। মানুষ তো পশুপাখি না। মানুষ রোগীকে দেখবে পরম আদরে এবং মমতায়। রোগকে ঘৃণা করা যায় রোগীকে কেন?
আমি এইডস রোগী আব্দুল মজিদকে (আসল নাম না, নকল নাম) বললাম, ভাই আমি AIDS নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি বানাব। আপনি কি সেখানে কাজ করবেন?
আব্দুল মজিদ ক্লান্ত গলায় বলল, ‘‘আমার লাভ কী? আমি তো মরেই যাব।’’
আমি বললাম, ‘আপনার লাভ হল, ডকুমেন্টরি দেখে বাংলাদেশের মানুষ সাবধান হবে।' আব্দুল মজিদ রাজি হলেন। তবে শেষ পর্যন্ত কাজ করতে পারলেন না। আমি সিলেট থেকে ফিরে চিত্রনাট্য তৈরি করার পর পরই শুনলাম তিনি মারা গেছেন।
শব্দার্থ ও টীকা
অপরাহ্নের গল্প - আক্ষরিক অর্থে বিকালের গল্প। গল্পে লেখক বিকাল বলতে জীবনের পড়ন্ত বেলা অর্থাৎ জীবনের শেষ পরিণতিকে ইঙ্গিত করেছেন।
ডকুমেন্টারি (Documentary) - প্রামাণ্য। ডকুমেন্টারী ফিল্ম-প্রামান্য চিত্র।
এইডস (AIDS- Acquired Immune Deficiency Syndrome) - এইডস এক ধরনের ভাইরাসঘটিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, ফলে তার মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়ে।
ভাইরাস (Virus) - সংক্রামক রোগের বীজ।
ইন্দোনেশিয়া - দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। প্রায় ১৭০০০ দ্বীপ নিয়ে এ দেশটি গঠিত। অধিবাসীদের মধ্যে শতকরা ৮৮ জন মুসলমান। বর্তমান জনসংখ্যা সাড়ে ২৩ কোটি। ১৯৪৫ সালে দেশটি হল্যান্ড-এর কাছ থেকে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত হয়। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা।
ঘাতক ব্যাধি - যে রোগ বা ব্যাধি মানুষকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়। মরণব্যাধি।
নেক ব্যক্তি - পুণ্যবান ব্যক্তি বা মানুষ।
কঙ্কালসার - হাড়-পাঁজর মাত্র অবশিষ্ট আছে এমন অত্যন্ত শীর্ণ।
প্রতীক্ষা - অপেক্ষা। অজান্তে-কাউকে না জানিয়ে। অজ্ঞাতসারে।
অভিশাপ - অভিসম্পাত। অনিষ্টকামনা।
কুষ্ট রোগ - মহারোগবিশেষ। তবে আজকাল কুষ্ট রোগের সহজ চিকিৎসা রয়েছে।
যৌনতা - স্ত্রী পুরুষের বিবাহ-উত্তর কামপ্রবৃত্তি।
সমকামী - সমলিঙ্গভুক্ত যৌনকামী।
নিউইয়র্ক - আমেরিকার ৩য় বৃহত্তম শহর। আয়তন ৮০০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৮০ লক্ষ।
ক্যালিফোর্নিয়া - আমেরিকার ৩য় বৃহত্তম প্রদেশ। আয়তন প্রায় ৪ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ। এর অন্যতম দুটি শহর লস এঞ্জেলেস ও সানফ্রান্সিসকো।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা - রোগ নিবারণ ক্ষমতা। যে শারীরিক ক্ষমতায় মানুষ রোগ প্রতিহত করতে পারে।
ডায়রিয়া (Diarrhoea) - পেটের অসুখ। ঘনঘন পাতলা পায়খানা।
লসিকা গ্রন্থি (Lymph Gland) - লসিকা গ্রন্থি হচ্ছে এমন এক ধরনের গ্রন্থি যা শরীরকে বিভিন্ন জীবাণু ও ক্ষতিকর কোষের হাত থেকে রক্ষা করে। সাধারণত মানুষের ঘাড়ে, বগলে ও কুঁচকিতে লসিকা গ্রন্থি বেশি থাকে।
সংহারক - সংহারকারী। বিনাশকারী।
জাতিসংঘ - (United Nations Organization-UNO„) - দেশে দেশে শান্তি, নিরাপত্তা এবং বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯৪৫ সালে ২৪ শে অক্টোবর সানফ্রান্সিসকোতে মাত্র ৫০টি সদস্য-রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত হয় বর্তমানে এর সদস্য-রাষ্ট্র সংখ্যা ১৩২।
আড়ম্বর - জাঁকজমক।
পরিসংখ্যান (র্ওর্টর্ধ্রধড্র) - গণনা। কোনো বিষয়ের তথ্যসূচক হিসাব।
সংক্রমিত - এক দেহ থেকে অন্য দেহে সঞ্চারিত।
আক্রান্ত - ব্যাধিগ্রস্ত। পীড়িত।
সাহারা - সাহারা নামক মরুভূমি।
উল্লসিত - আনন্দিত। উৎফুল্ল।
স্পেডকে স্পেড বলা - গল্পে ‘বাস্তব সত্যকে স্বীকার করে নেওয়া' অর্থে ব্যবহৃত।
অনগ্রসর - অগ্রগামী নয়। পিছিয়ে পড়া।
হতদরিদ্র - খুবই গরিব। অভাবগ্রস্ত। অসচ্ছল।
পতিতাবৃত্তি - বেশ্যাবৃত্তি। যৌনপেশা।
যৌনকর্মী - যৌনকর্ম যার পেশা। পতিতা।
ট্যাবু (Taboo) - নিষিদ্ধ। অলঙ্ঘনীয়।
সুপ্ত - ঘূমন্ত।
হিরোইন (Heroin) - মাদকদ্রব্য। মরফিন থেকে তৈরি মাদকবিশেষ।
আসক্ত - অতিশয় অনুরক্ত।
ব্লাড ব্যাংক - রক্তভান্ডার। অসুস্থ বা আহতদের জন্য সুস্থ মানুষের দেহ থেকে আহরিত রক্তের সঞ্চয়-ভান্ডার।
ছোঁয়াচে রোগ - স্পর্শ সংক্রমিত হয় এমন রোগ।
রোগগ্রস্ত - রোগাক্রান্ত।
মমতা - স্নেহ। মায়া। ভালবাসা।
অনুশীলনমূলক কাজ
বিশুদ্ধ উচ্চারণ
প্রদত্ত শব্দ শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ
লেখক - লেখক্ [ল্যাখোক' নয়]
নিঃশ্বাস - নিশ্শাশ
প্রতীক্ষা - প্রোতিক্খা
মন - মোন
পর্যন্ত - পোর্জানতো
লক্ষণ - লোক্খোন্
অনুশাসন - ওনুশাশোন্
দেশ - দেশ [‘দ্যাশ' নয়]
অতিক্রম - ওতিক্ক্রোম্্
গ্লাস (ঐফট্র) - গ্লাস্ [‘গ্লাশ্' নয়]
দেখবে - দেখ্বে [দ্যাখবে' নয়]
দেখা - দ্যাখা [‘দেখা নয়]
হল - হোলো
একা - অ্যাকা [‘একা' নয়]
একটি - এক্টি [অ্যাক্টি' নয়]
শেষ - শেশ্ [‘শ্যাশ্' নয়]
বানান সতর্কতা
ব্যাধি কুষ্ঠ
ভালোমতো সম্পৃক্ততা
সংক্রমিত মরণ
কীভাবে অস্বস্তি
ভবিষ্যৎ আসক্ত
দুষিত ছোঁয়াচে
রোগগ্রস্ত তৈরি
রাজি অপরাহ্ন
দীর্ঘ উত্তর-প্রশ্ন
১. এইডস রোগের জন্ম ও এর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা কর।
২. মানুষের শরীরে এইচআইভি’র অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
৩. এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যান এবং বাংলাদেশে এ রোগের বিস্তার সম্পর্কে লেখ।
৪. ‘অপরাহ্নের গল্প’ অবলম্বনে মজিদের করুণ পরিণতির কারণ বিশ্লেষণ কর।
বিষয়ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. HIV বলতে কী বোঝায়?
২. মজিদের পরিবার তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল কেন?
৩. এইচআইভি মানুষের শরীরে কীভাবে কাজ করে?
৪. UNAIDS কোন সংস্থার সংক্ষিপ্ত নাম?
৫. বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুর পরিসংখ্যা ব্যাখ্যা কর।
৬. মানুষের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস কোথায় থাকে?
৭. এইডস রোগ বিস্তারের মূল কারণসমূহ কী?
ব্যাখ্যা
১. এইডস-এর কপালে পাপের শাস্তির সিল ভালোমতো পড়েছে?
২. পাগলা ঘোড়া কোনো সময় লাগামছাড়া হতে পারে।
৩. অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে স্পেডকে স্পেড বলাই বাঞ্ছনীয়।
৪. অবাধ মেলামেশাকে এখন অনেকেই আধুনিকতার অংশ মনে করছে।
৫. রোগকে ঘৃণা করা যায়, রোগীকে কেন?